অনেক কালজয়ী গানের স্রষ্টা, কিংবদন্তি গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পুত্রবধূ শাহানা মির্জা।
তিনি বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায় র আজ সকাল সাড়ে ৬টাদিকে তাকে (গাজী মাজহারুল আনোয়ার) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ডাক্তার দেখে বলেন তার পালস পাওয়া যাচ্ছে না। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
শাহানা মির্জা আরও জানান, গত কয়েকদিন ধরে এসিডিটির সমস্যায় ভুগছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। আমরা গতকালকে তাকে ডাক্তারের কাছেও নিয়ে যাই। রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছিল। আজকে আরও অনেক কিছু পরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই তো তিনি চলে গেলেন।
দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বেতার, টেলিভিশন, সিনেমাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কয়েক হাজার গান রচনা করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার লেখা কালজয়ী গানও অসংখ্য। গীতিকবিতায় অবদান রাখার জন্য ২০০২ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি। গত বছর পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক। এছাড়া পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
বিবিসি বাংলা তৈরি করা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় ঠাঁই পায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা তিনটি। তার লেখা কিছু কালজয়ী গান হলো-‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’ প্রভৃতি।
উল্লেখ্য, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। তার গানে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ’সহ আরও নানা প্রসঙ্গ।